আজ শুক্রবার (১৭ জুন ) বিকাল ৩ টায় খুলনা মহানগরীর নিউমার্কেট বাইতুন নূর মসজিদ চত্বরে খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের উদ্যোগে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিজিপির মিডিয়া মুখপাত্র নুপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দাল কতৃক হযরত মুহাম্মদ সা. ও মা আয়েশা রা. কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদ, তাদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এক বিশাল প্রতিবাদ সভা খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ সালেহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের সহ-সভাপতি হাফেজ মাওলানা মোস্তাক আহমেদ, মাওলানা শেখ আব্দুল্লাহ, মাওলানা রহমত আলী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, যুগ্ন সম্পাদক মাওলানা নাসির উদ্দিন কাসেমী, অধ্যক্ষ মাওলানা এ এফ এম নাজমুস সউদ, মুফতি গোলামুর রহমান, হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মোল্লা মেরাজুল হক, মাওলানা কারামাত আলী, মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, মাওলানা নূর সাইদ জালালী, মাওলানা আহমদ আলী, শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, শেখ হাসান ওবায়দুল করিম, শায়খুল ইসলাম বিন হাসান, মুফতী রবিউল ইসলাম রাফে, মাওঃ শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক জাফর সাদেক, মাওলানা আনোয়ারুল আজিম, মাওলানা শফিকুল ইসলাম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা সালেহ বলেন, বর্তমান সরকারকে মুসলমানদের সরকার বলা যায় না; এটা মোদির আজ্ঞাবহ সরকার। তিনি বলেন, অবিলম্বে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব পাশ করতে হবে। ভারতে নবীপ্রেমিকদের ঘর-বাড়ী বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এটা মানবতাবিরোধী অসভ্য সরকারের কাজ। ভারতে এখন মুসলমানদের উপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চলছে। তারা মুসলমানদের ঘর-বাড়ী নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে। বাংলাদেশে আমরা সকল ধর্মাবলম্বিদের নিয়ে সহাবস্থানে বসবাস করছি। মুসলমানরা অসভ্য জাতি নয়। তিনি ভারতের অন্যায়ের কারণে যেন বাংলাদেশে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটানো হয়, এজন্য সকলের প্রতি আহ্বানও জানান।

তিনি বলেন, ভারত সরকারকে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকারী কুলাঙ্গারদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। শত কোটি মানুষের প্রাণের স্পন্দন মহানবী (সা.)-এর সম্মানহানী করা এবং প্রতিবাদী জনতার সম্পদ বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়ার যে হিংস্রতা বিজেপি শাসিত ভারত দেখাচ্ছে, তা সভ্যতার এক কলঙ্কজনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিজেপির এই বর্বরতা ভারতের ভিত্তি-শর্ত ভঙ্গ করেছে। এর পরিণতিতে ভারতের অখণ্ডতা হুমকিতে পড়বে, গোটা উপমহাদেশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়বে।

বিজেপির উগ্র সাম্প্রদায়িক আচরন অব্যহত থাকলে বাংলাদেশের শান্তিকামী জনতা সকল প্রকার ভারতীয় পণ্য-সেবাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে সর্বাত্মক বয়কট করবে। সভ্যতার এই উৎকর্ষের যুগে বিজেপি যা করেছে, তা রীতিমত প্রস্তর যুগীয় বর্বরতা। এই বর্বরতা অব্যাহত থাকলে বিশ্বব্যাপী শুভবুদ্ধির মানুষ সম্মিলিতভাবে এই বর্বরদের প্রতিহত করবে।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ৯২% মুসলমান ও শতভাগ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের সরকার বিজেপির বিভৎস সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কোন নিন্দা পর্যন্ত জানাতে পারেনি। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না। সরকারকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে চলতি সংসদেই ভারতীয় আচরনের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনুন। অন্যথায় আপনাদেরকেও বিজেপির সহযোগী বলে ধরে নেয়া হবে।

বক্তারা বলেন, জাতিসংঘ, ওআইসিসহ বিশ্ব শক্তির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভারতের বর্বরতা রোধে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিন। অন্যথায় বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়বে। জাতিসংঘ মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। ভারত নিজেদেরকে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার দাবি করলেও হিন্দু ছাড়া অন্যান্য ধর্মাবলম্বিদের ধর্ম পালন করতে দিচ্ছে না। বিশ্ব মিডিয়ায় উঠে আসছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে সে দেশের মুসলমানরা।

প্রতিবাদ সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। সমাবেশ শেষে এক বিশাল মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।